• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪২৯

অপরাধ

নির্যাতন থেকে বাঁচতে গৃহকর্মীর দেয়াল পাড় হয়ে আত্মরক্ষা

  • অনলাইন ডেস্ক
  • প্রকাশিত ০৫ ডিসেম্বর ২০২৩

লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ

লালমনিরহাটে এক উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তার স্ত্রী কর্তৃক মধ্যযুগীয় কায়দায় সুমী খাতুন (১৩) নামে এক গৃহকর্মীকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে আত্মরক্ষায় রাতের আঁধারে দেয়াল পাড় হয়ে পাশের বাড়িতে আশ্রয় নেয় ওই গৃহকর্মী। শহরের বানভাসা এলাকায় মসলা গবেষণা উপকেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটেছে।

জানা গেছে,ওই মসলা গবেষণা উপকেন্দ্রে উধর্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা পদে কর্মরত ছিলেন মোস্তাক আহমেদ লেলিন। সম্প্রতি তিনি অন্য জেলায় বদলি হলেও এখনো মসলা গবেষণা উপকেন্দ্রের বাউন্ডারি ওয়াল বেষ্টনীর ভেতর দুইতলা সরকারি ভবনে পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন। তার ওই ভবনে গৃহকর্মীর কাজ করতো সুমী খাতুন।

অভিযোগ উঠেছে, ওই গৃহকর্মীকে তুচ্ছ কারণে অমানুষিক নির্যাতন করতো সরকারি কর্মকর্তা লেলিনের স্ত্রী তানিয়া আক্তার ইভা। কারণে অকারণে চর থাপ্পড় মারতো তাকে। মাঝে মধ্যেই লাঠি দিয়ে পেটাতো, এমনকি গরম খুনতি দিয়ে হাত ও শরীরে ছ্যাঁকা দিতো। স্বামী স্ত্রী বাইরে গেলে ঘরে তালা মেরে বন্দী করে রেখে যেতো। এভাবে অনেক সময় না খেয়েও থাকতো সুমীকে। ঘটনার দিন শিশুর ঝুটা দুধ রুটি খাওয়ার অভিযোগে ভাত নাড়া লারকি দিয়ে সুমীকে বেধরক পিটিয়ে শরিরের বিভিন্ন স্থানে ফোলা জখম করে।

অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে গত শুক্রবার (২নভেম্বর) রাতে সবাই ঘুমিয়ে পড়লে বাসা থেকে বেরিয়ে দেয়াল পাড় হয়ে পাশের বাড়িতে আশ্রয় নেয় গৃহকর্মী সুমী। পাশের বাসার উম্মে জান নামে এক গৃহবধূ তাকে আশ্রয় দিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করে। পরদিন সকালে এলাকার নারী পুরুষ মিলে গৃহকর্মী সুমীকে পৌরসভার মেয়র রেজাউল করিম স্বপনের বাসায় রেখে আসেন। এসময় সুমীর শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন ছিলো।

এদিকে গত কয়েকদিন কাউকে না জানিয়ে গোপনে বিভিন্ন স্থানে খুঁজতে থাকেন ওই কর্মকর্তা ও তার স্ত্রী। পরে খুঁজে না পেয়ে থানায় জিডি করেন এবং মাইকিং করে তারা। আর তখন ঘটনা জানাজানি হয়।
নির্যাতনের শিকার গৃহকর্মী সুমী জানান, প্রায় প্রতিদিনই তাকে ডার মার করা হতো। বাসার সবার খাওয়া শেষ হলে তাকে কাজে লাগিয়ে দিতো। কাজ শেষ করে তবেই জুটতো খাবার। মাঝে মধ্যে লাঠি দিয়েও পেটাতো। বাইরে গেলে ঘরে তালা বন্ধ করে রাখতো।

প্রতিবেশি সোহাগ নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, ওই গৃহকর্মীর নির্যাতনের বর্ণনা শোনে সেদিন অনেকেই কেঁদে ফেলেছেন। তাই এলাকাবাসী সুমীকে আর ওই বাসায় না দিয়ে পৌরসভার মেয়র স্বপনের বাসায় রেখে আসেন।

তবে এ ব্যাপারে উধর্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোস্তাক আহমেদ লেলিন বলেন, স্ত্রী তানিয়া আক্তার ইভা মাঝে মধ্যে একটু শাসন করতো। সুযোগ পেলে পালানোর চেষ্টা করতো সুমী। তাই ঘরে তালা মেরে রাখা হতো। তবে কি কারনে গৃহকর্মী সুমী পালানোর চেষ্টা করতো এমন প্রশ্নের কোন উত্তর দেন নি তিনি।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads